Header Ads Widget

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত বেড়েছে ৩৩ গুণ, রহস্য ঘিরে জোরালো প্রশ্ন

 সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত বেড়েছে ৩৩ গুণ, রহস্য ঘিরে জোরালো প্রশ্ন

সুইজারল্যান্ডের সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (SNB) সদ্য প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের আমানতের পরিমাণ ৩৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ব্যাংকটিতে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৮ কোটি ৯৫ লাখ সুইস ফ্রাঁ, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা (প্রতি ফ্রাঁ ১৪৯.৬৯ টাকা ধরে হিসাব)।



অথচ আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে এই পরিমাণ ছিল মাত্র ১ কোটি ৭৭ লাখ সুইস ফ্রাঁ বা প্রায় ২৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশিদের সুইস ব্যাংকে রাখা অর্থ বেড়েছে প্রায় ৮ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা।

হঠাৎ এই উল্লম্ফন কেন?

প্রতিবেদনে এই উল্লম্ফনের নির্দিষ্ট কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সরকারবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন, রাজপথে উত্তেজনা এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা অনেক ধনীদের মধ্যে নিরাপদে অর্থ স্থানান্তরের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়। ক্ষমতা হারানোর আশঙ্কায় অনেকেই অর্থ পাচারের মাধ্যমে বিদেশে মূলধন সরিয়ে নিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অতীতের প্রেক্ষাপট

২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশিদের আমানতের পরিমাণ বাড়লেও ২০২২ ও ২০২৩ সালে তা নাটকীয়ভাবে কমে গিয়েছিল। ২০২১ সালে বাংলাদেশিদের সুইস ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ ৮৭ কোটি ১১ লাখ ফ্রাঁ। সেখান থেকে মাত্র দুই বছরে তা নেমে যায় ১ কোটি ৭৭ লাখে। কিন্তু ২০২৪ সালে আবার সেই অর্থ প্রবাহ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে এর পেছনের উদ্দেশ্য নিয়ে।

আরও কিছু তথ্য

সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক জানায়, যেসব বাংলাদেশি নাগরিকেরা নাগরিকত্ব গোপন রেখে অর্থ জমা রেখেছেন, তাদের অর্থ এই হিসাবে ধরা হয়নি। এছাড়া ব্যাংকে গচ্ছিত স্বর্ণ বা মূল্যবান সামগ্রীর আর্থিক মূল্য এই হিসাবের অন্তর্ভুক্ত নয়।

বিশ্লেষকদের মতে, গোপনীয়তা নীতিতে পরিবর্তনের কারণে অনেকেই এখন সুইজারল্যান্ডের পরিবর্তে ট্যাক্স হ্যাভেন হিসেবে পরিচিত লুক্সেমবার্গ, কেম্যান আইল্যান্ড, বারমুডা বা ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডের মতো দেশে অর্থ স্থানান্তর করছেন। তবুও সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের হঠাৎ বিপুল পরিমাণ অর্থ বৃদ্ধির বিষয়টি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং আইনগত পর্যায়ে গভীর তদন্তের দাবি রাখে।

Post a Comment

0 Comments