বিয়ে নয়, পড়াশোনাই আগে — ইউএনওর সঠিক পদক্ষেপে রক্ষা পেল ছাত্রী
অভিযান ও জরিমানা: বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের একটি গ্রামে গত রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাল্যবিবাহের আয়োজন বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা। উপজেলার একটি গ্রামের বাড়ির উঠানে প্যান্ডেল বসানো হয়েছিলো, রান্নার গন্ধে মুখর ছিল চারপাশ। আত্মীয়স্বজনের আসা-যাওয়া আর গানের সুরে জমে উঠেছিল বিয়েবাড়ির বর্ণিল আয়োজন। কিন্তু হঠাৎ সেই বিয়েবাড়িতে উপস্থিত হন ইউএনও।
স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামে ১৪ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রীর বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। বাল্যবিবাহের গোপন খবর পেয়ে ইউএনও রুবেল রানা নিজে সরেজমিনে অভিযানে যান। বিয়েবাড়ির উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির লোকজন ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। পরে মেয়ের বাবা ইউএনওর সামনে এসে বাল্যবিবাহের বিষয়টি স্বীকার করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মেয়ের বাবাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি, ১৮ বছরের কম বয়সে মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ার একটি মুচলেকা নেওয়া হয়, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনৈতিক ও অবৈধ কাজ থেকে বিরত থাকেন।
ইউএনও রুবেল রানা বলেন,
“বাল্যবিবাহ একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এর মাধ্যমে কিশোরীদের শিক্ষাজীবন ও ভবিষ্যৎ চিরতরে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করা হয়। স্থানীয় জনগণ ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে পেরেছি। আমরা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আরো কঠোর পদক্ষেপ চালিয়ে যাব।”
স্থানীয়রা জানান, প্রশাসনের দ্রুত ও কঠোর হস্তক্ষেপে তারা অনেকটাই সান্ত্বনা পেয়েছেন। একই সঙ্গে আশা প্রকাশ করেন, এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে প্রশাসনের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।
রংপুরের জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসন নিয়মিত অভিযান চালিয়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করে আসছে। বাল্যবিবাহ বন্ধে এই ধরনের অভিযান তরুণ সমাজ ও পরিবারের জন্য এক শক্তিশালী বার্তা হিসেবে কাজ করছে।
0 Comments