Header Ads Widget

তিন বছরের লক্ষ্য ধরে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা

তিন বছরের লক্ষ্য ধরে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা


অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি অর্জনই মূল লক্ষ্য

২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. মুজিবুল হক আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) জানিয়েছেন, এবারের বাজেট শুধুমাত্র এক বছরের জন্য নয়, বরং আগামী তিন বছরের একটি সমন্বিত পরিকল্পনার ভিত্তিতে প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে রাজস্ব আদায়, ব্যয় কাঠামো ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির টেকসই ধারা বজায় রাখাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

রাজধানীর পরিকল্পনা কমিশনে আয়োজিত এক বাজেট সংলাপে তিনি বলেন,

“আমরা স্বল্পমেয়াদি চাপে বিচলিত নই। বাজেটকে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে পরিকল্পনা করে সাজানো হয়েছে—যাতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতিশীলতা এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়।”

বাজেটের তিনটি প্রধান লক্ষ্য

অর্থ উপদেষ্টা যে তিনটি কৌশলগত লক্ষ্য তুলে ধরেছেন, তা হলো:

  1. মধ্যমেয়াদি রাজস্ব কৌশল বাস্তবায়ন:
    এনবিআরকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ বাড়ানো, ডিজিটাল ট্যাক্স ব্যবস্থাপনা ও কর জিডিপি অনুপাত বাড়ানো।

  2. অগ্রাধিকার খাতে ব্যয় বৃদ্ধি:
    স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অধিক বরাদ্দ। পাশাপাশি, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) কার্যকারিতা বাড়ানোর ওপর জোর।

  3. অর্থনৈতিক সংস্কার ও শৃঙ্খলা:
    বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ, বিদেশি ঋণের ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, এবং রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের ব্যয় হ্রাস।

প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ

  • ২০২৪–২৫ অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬.৮%, যা পরবর্তী দুই বছরে ৭% ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা।

  • মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কঠোর মুদ্রানীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বাজেট পরিকল্পনা করা হয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন,

“অতীতের বাজেটগুলো প্রায়ই ‘অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী’ হতো, বাস্তবায়ন হতো কম। এবারের বাজেটে আমরা বাস্তবমুখী লক্ষ্যের দিকে মনোনিবেশ করেছি।”


আইএমএফের শর্ত ও বাজেট বাস্তবতা

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর সঙ্গে চলমান ঋণচুক্তির আলোকে কর কাঠামো সংস্কার, ভর্তুকি হ্রাস ও ব্যয় দক্ষতা বৃদ্ধির অঙ্গীকার রাখা হয়েছে বাজেটে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন,

“আইএমএফ আমাদের বাধ্য করছে না। তারা সহায়তা করছে। তাদের পরামর্শের অনেক কিছুই আমরা নিজেদের স্বার্থেই বাস্তবায়ন করছি।”

রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা

  • এনবিআর আয় লক্ষ্যমাত্রা: ৫ লক্ষ ৪৫ হাজার কোটি টাকা

  • অ-কর রাজস্ব: ৪৩ হাজার কোটি টাকা

  • মোট ব্যয়: ৭ লক্ষ ৯০ হাজার কোটি টাকা (প্রস্তাবিত)

  • বাজেট ঘাটতি: জিডিপির ৫% এর মধ্যে রাখার লক্ষ্য

বিশেষ বার্তা: জনমুখী ও সংস্কার-ভিত্তিক বাজেট

অর্থ উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে বারবার বলেছেন,

“এই বাজেট শুধু সংখ্যার খেলা নয়। এটি হচ্ছে একটি নীতিনির্ভর রূপান্তর পরিকল্পনা—যা আগামী তিন বছর ধরে দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল ও কার্যকর পথে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।”


Post a Comment

0 Comments