WelCome To

1mnews01

পলাতক ৪০ পুলিশ কর্মকর্তার পদক প্রত্যাহার

Header Ads Widget

banner

পলাতক ৪০ পুলিশ কর্মকর্তার পদক প্রত্যাহার

পলাতক ৪০ পুলিশ কর্মকর্তার পদক প্রত্যাহার

✍️ মুনিয়া মুমু | সিনিয়র প্রতিবেদক, 1M News

প্রকাশের তারিখ: ১১ আগস্ট ২০২৫

ঘটনার সারসংক্ষেপ

জুলাই আন্দোলনের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত ডিআইজি বিপ্লব কুমার সরকারসহ মোট ৪০ জন পলাতক পুলিশ কর্মকর্তার পদক প্রত্যাহার করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

গত ৭ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব তৌছিফ আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। যদিও প্রজ্ঞাপনটি বৃহস্পতিবার জারি হলেও বিষয়টি জানা যায় রবিবার (১০ আগস্ট)।


প্রজ্ঞাপনের মূল বক্তব্য

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে—

"ইতোমধ্যে নিজ কর্মস্থল হতে পলায়ন করায় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এরূপ ৪০ (চল্লিশ) জন পুলিশ সদস্যের অনুকূলে প্রদত্ত পুলিশ পদক প্রত্যাহার করা হলো।"

এর মানে, কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চালু আছে, এবং তাদের সম্মাননা হিসেবে প্রাপ্ত পদক আর বহাল থাকবে না।


প্রেক্ষাপট: জুলাই আন্দোলন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের ভূমিকা

২০২৫ সালের জুলাই মাসে সারাদেশে তীব্র গণবিক্ষোভ শুরু হয়, যা শেষ পর্যন্ত তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটায়। আন্দোলনের সময় এবং পরবর্তী দিনে নিরাপত্তা বাহিনীর অনেক সদস্য বিতর্কিত ভূমিকা পালন করেন—

  • কেউ কেউ সরকারের পক্ষে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগে অভিযুক্ত হন

  • আবার অনেকে হঠাৎ করেই দায়িত্ব থেকে সরে যান বা দেশ ত্যাগ করেন

সরকারি সূত্রে জানা যায়, পদকপ্রাপ্ত অনেক কর্মকর্তাই আন্দোলনের সময় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু পরে তারা কর্মস্থল ত্যাগ করেন এবং ফেরেননি।


পদক প্রত্যাহারের তাৎপর্য

বাংলাদেশে "পুলিশ পদক" সাধারণত অসাধারণ সাহসিকতা, সেবায় উৎকর্ষ বা বিশেষ অবদানের জন্য প্রদান করা হয়।
পদক প্রত্যাহার মানে—

  • কর্মকর্তার সম্মান ও মর্যাদার ক্ষতি

  • ক্যারিয়ারে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব

  • ভবিষ্যতে কোনো পদোন্নতি বা সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাওয়া

এটি শুধু প্রশাসনিক শাস্তি নয়, বরং প্রতীকীভাবে সরকারের পক্ষ থেকে একটি কঠোর বার্তা: দায়িত্বে অবহেলা বা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব থেকে পলায়ন সহ্য করা হবে না।


বিশ্লেষণ: সরকারের কৌশল

পদক প্রত্যাহারকে বিশ্লেষকরা তিনটি দিক থেকে দেখছেন—

  1. জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা: পুলিশের মধ্যে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং দায়িত্ব পালনে গাফিলতির বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান।

  2. রাজনৈতিক বার্তা: আন্দোলনের পর নতুন সরকারের "দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা" নীতি প্রদর্শন।

  3. মনোবল পুনর্গঠন: যারা দায়িত্বে আছেন, তাদের জন্য সতর্ক সংকেত—অবহেলা করলে পুরস্কারও হারাতে হবে।


উপসংহার

জুলাই আন্দোলনের পর প্রশাসনে পরিবর্তনের ঢেউ এখনো চলছে। ৪০ জন পুলিশ কর্মকর্তার পদক বাতিল একটি প্রতীকী কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি শুধু ব্যক্তিগত শাস্তি নয়, বরং পুরো বাহিনীর জন্য একটি বার্তা—রাষ্ট্রের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

 

Post a Comment

0 Comments