জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত অজ্ঞাত ছয়জনের দাফন, ডিএনএ সংরক্ষণ
প্রতিবেদক: মুনিয়া মুমু | 1M News
তারিখ: ৭ আগস্ট ২০২৫ | ঢাকা
২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের সময় নিহত অজ্ঞাত ছয়জনের মরদেহ অবশেষে দাফনের জন্য আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে আদালতের নির্দেশে এই মরদেহ হস্তান্তর করে পুলিশ। দাফনের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে রাজধানীর জুরাইন কবরস্থানে।
দীর্ঘ এক বছর মর্গে
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মরদেহগুলো গত এক বছর ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের হিমঘরে সংরক্ষিত ছিল। অজ্ঞাত এই ছয়জনের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও একজন নারী। চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে, ২০২৪ সালের ৭ থেকে ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে মরদেহগুলো হাসপাতালে আসে এবং প্রতিটির শরীরেই গুরুতর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।
মৃত্যুর কারণ
পুলিশ আরও জানায়, ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে তীব্র আঘাতজনিত কারণে এবং একজন নিহত হন শটগানের গুলিতে। বিষয়টি অভ্যুত্থানকালীন সহিংসতার ভয়াবহতা আরও স্পষ্ট করে তোলে।
পরিচয়হীন, কিন্তু বিস্মৃত নয়
যদিও এই ছয়জনের পরিচয় এখনো অজানা, তবে ভবিষ্যতে তাদের শনাক্ত করার সম্ভাবনা বাতিল করা হয়নি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রত্যেক মরদেহের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। পরিচিত কেউ দাবি করলে সেই ডিএনএ নমুনার সঙ্গে মিলিয়ে পরিচয় শনাক্তের প্রক্রিয়া চালানো হবে।
আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মানবিক দায়িত্ব
আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরেই অজ্ঞাতনামা ও লাশবিহীন মরদেহের দাফনের কাজে যুক্ত রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে মরদেহগুলো সম্মানজনকভাবে দাফনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
২০২৪ সালের ৫ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত রাজধানীজুড়ে চলা গণআন্দোলন ও সহিংসতা চলাকালে অসংখ্য মানুষ নিহত হন। সেই সময় বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার হওয়া অনেক মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, এই ছয়জনও সেই সময়কার আন্দোলনের শিকার।
উপসংহার:
এই ছয়জন নিহত ব্যক্তির পরিচয় অজ্ঞাত থাকলেও, তাদের মৃত্যু আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় এক অস্থির সময়ের ইতিহাস। রাষ্ট্র ও সমাজের দায়িত্ব এখন—এই মরদেহগুলো যেন কেবল একটি সংখ্যা হয়ে না থাকে। তাদের পরিচয় উদ্ঘাটনের চেষ্টাও যেন থেমে না যায়।
মুনিয়া মুমু
সিনিয়র নিউজ রিপোর্টার | 1M News
0 Comments